শিক্ষক নিবন্ধন গণবিজ্ঞপ্তি ; বদলে যাচ্ছে পরীক্ষার ধরণ। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে প্রার্থীদের অবশ্যই শিক্ষক নিবন্ধন সনদ অর্জন করতে হয়। এই সনদ অর্জনের একমাত্র পথ হলো বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) আয়োজিত নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। বর্তমানে এই প্রক্রিয়া যেভাবে পরিচালিত হয়, সেখানে সরকার বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। জনপ্রশাসন এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর তা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ২৫ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার পদ্ধতি, বয়স গণনার নিয়ম এবং ভাইভার প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরীক্ষার ধরণে পরিবর্তন: এমসিকিউ ও লিখিত হতে পারে একধাপে
নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রার্থীদের বাছাইয়ের জন্য একটি নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। এই পরীক্ষাটি এমসিকিউ এবং লিখিত—উভয় ধরণের হতে পারে এবং তা একধাপেই সম্পন্ন করার চিন্তা করা হচ্ছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মতোই এটি পরিচালনার কথা ভাবা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “বর্তমানে প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। লিখিত পরীক্ষা গ্রহণে অনেক সময় লেগে যায়। সময় বাঁচাতে এনটিআরসিএ এমন পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়েছে।” তবে তিনি এটিও স্পষ্ট করেন যে, লিখিত পরীক্ষা একেবারে বাদ দেওয়া হচ্ছে না, বরং বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য তা বজায় রাখা হবে।
এই তথ্যটি শিক্ষা সংক্রান্ত খবর বিভাগে নিয়মিত প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ আপডেটের অংশ।
শূন্যপদের দ্বিগুণ প্রার্থী পাবেন ভাইভার সুযোগ
নতুন নীতিমালায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো, শূন্যপদের দ্বিগুণ প্রার্থীকে ভাইভার জন্য ডাকার সিদ্ধান্ত। উদাহরণস্বরূপ, কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৫০ হাজার শূন্যপদ থাকলে ১ লাখ প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।
তাছাড়া, চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশেও থাকবে উদারতা। শূন্য পদের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি প্রার্থীকে পাস করানো হবে, যাতে ভবিষ্যতের জন্য একটি প্রস্তুত প্রার্থী তালিকা তৈরি থাকে।
এই খবরটি সাপ্তাহিক চাকরির খবর বিভাগের জন্যও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
বয়স গণনায় নতুন নিয়ম: শিক্ষক নিবন্ধন গণবিজ্ঞপ্তি তারিখই বিবেচ্য
সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষক নিবন্ধনের জন্য বয়স গণনার সময় নির্ধারিত হবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ অনুসারে। পূর্বে অনেক প্রার্থী নিবন্ধনের পর বিজ্ঞপ্তি জারির সময় বয়স সীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণে আবেদন করতে পারতেন না। এই নিয়ম পরিবর্তনের ফলে এমন সমস্যা আর হবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, “একজন প্রার্থী নিবন্ধন করতে গিয়ে কয়েক বছর সময় নেন। ফলে বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় আবেদন করতে পারেন না। এবার থেকে বিজ্ঞপ্তির তারিখ অনুযায়ী বয়স গণনা করায় অধিক প্রার্থী সুযোগ পাবেন।”
এই নীতিগত পরিবর্তনের ফলে, সরকারি চাকরির খবর বিভাগে নতুন করে প্রাণ সঞ্চার হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
কেন নিয়ম পরিবর্তন জরুরি ছিল?
বর্তমানে শিক্ষক নিবন্ধন পদ্ধতিতে সময়ক্ষেপণ, জটিলতা এবং বয়সজনিত প্রতিবন্ধকতা ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই নীতিমালার মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত, স্বচ্ছ এবং প্রার্থীবান্ধব হওয়ার পথে এগোচ্ছে। এনটিআরসিএ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
আমাদের ‘জববাজার ২৪’ নিয়মিতভাবে এমন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও চাকরি সংক্রান্ত আপডেটগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরে। যারা শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে রয়েছে পরীক্ষার ফলাফল এবং বেসরকারি চাকরির খবর সংক্রান্ত এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট।